সুপ্রিয় পাঠক, আজকে আমি ছোট বাচ্চাদের সর্দি হলে করণীয় কি সে বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। আপনি যদি ছোট বাচ্চাদের সর্দি নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন তাহলে আজকের পোস্টটি শুধুমাত্র আপনার জন্য। আজকের এ পোস্টের মাধ্যমে আমি ছোট বাচ্চাদের সর্দি হলে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। চলুন আর দেরি না করে ছোট বাচ্চাদের সর্দি হলে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা শুরু করি।
ছোট বাচ্চাদের সর্দি হলে করণীয় – নবজাতক শিশুর সর্দি হলে করণীয়, নবজাতকের সর্দি হলে করণীয়, বাচ্চাদের সর্দি হলে কি থাওয়া উচিত, ৩ মাস শিশুর সর্দি হলে করণীয়, বাচ্চাদের সর্দি কাশির সিরাপ, বাচ্চাদের সর্দি কাশির ঔষধের নাম, বাচ্চাদের সর্দির ওষুধ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ভূমিকা: ছোট বাচ্চাদের সর্দি হলে করণীয় – নবজাতক শিশুর সর্দি হলে করণীয়
ছোট বাচ্চাদের সর্দি লাগা একটি স্বাভাবিক ঘটনা। শিশুদের জন্মহণের কিছূদিন পরেই তাদের আবহাওয়া পরিবর্তন জনিত ঠান্ডার প্রভাবে বাচ্চাদের সর্দি হয়ে থাকে। এ নিয়ে নবজাতকের পিতামাতা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।বাচ্চাদের সর্দি ভাল করার জন্য কি করতে হবে তারা জানেন না। অনেকে আবার এলোপ্যাথি ঔষধ ব্যবহার করতে চান না। তাই আজকের এ পোস্টের মাধ্যমেে ছোট বাচ্চাদের সর্দি হলে করণীয় বিষয়ক কিছূ ঘরোয়া পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করবো। তাই চলূন আর দেরি না করে ছোট বাচ্চাদের সর্দি হলে করণীয় কি তা জেনে নেই।
আরো পড়ুন: লাইফস্টাইলে পরিবর্তন করে উন্নত স্বাস্থ্য লাভের উপায় জেনে নিন
ছোট বাচ্চাদের সর্দি হলে করণীয়
সুপ্রিয় পাঠক, এখন আমি ছোট বাচ্চাদের সর্দি হলে করণীয় বিষয়ক আলোচনায় ছোট বাচ্চাদের সর্দি ভাল করার জন্য আমি কিছূ ঘরোয়া পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করবো। আপনি যদি ছোট বাচ্চাদের সর্দি সারানোর জন্য ঘরোয়া পদ্ধতি জানতে চান তাহলে আর্টিকেলের এ অংশটি আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। চলুন আর দেরি না করে ছোট বাচ্চাদের সর্দি হলে করণীয় – কিছূ ঘরোয়া পদ্ধতি জেনে নেই।
আদা ও মধুর সিরাপ খাওয়ানো
আপনি যদি আপনার বাচ্চার সর্দি ও কাশি সারাতে চান তাহলে আপনি আপনার বাচ্চাকে আদা ও মধুর সিরাপ খাওয়াতে পারেন।কারণ আদাতে বিদ্যমান উপাদান আপনার বাচ্চার সর্দি ও কাশি নিরাময়ে সহায়তা করবে। অপর দিকে মধুতে বিদ্যমান অ্যান্টিমাইক্রোবিয়ল অ্যান্টি অক্সিডেন্ট গুণ বাচ্চাদের সর্দি-কাশি দূর করতে ব্যাপকভাবে সহায়তা করে।
এক বছরের কম বাচ্চাদের মধু খাওয়ানো যাবে না। এতে তাদের বোটুলিজমের মতো রোগ হতে পারে। যা এক সময় মারাত্মক ক্ষতি সাধন করতে পারে।আদা ও মধুর সিরাপ তৈরির জন্য আপনাকে চার চামচ আদার রস ও চার চামচ মধু উষ্ণ গরম পানিতে ভালোভাবে মিশালে যে সিরাপ তৈরি হবে সে সিরাপ আপনি আপনার বাচ্চাকে খাওয়ালে তা আপনার বাচ্চার সর্দি- কাশি দূর করবে।এবং আপনি আপনার বাচ্চার সর্দি-কাঁশি থেকে বাঁচাতে পারবেন।
মধু, গ্লিসারিন ও লেবুর সিরাপ খাওয়ান
গ্লিসরারিন, মধু ও লেবুর রস মিশ্রিত তৈরি সিরাপ আপনার শিশুর সর্দি ও কাঁশি দূর করতে ব্যাপকভাবে সাহায্য করবে। এই সিরাপ তৈরি করতে অবশ্যই মেডিবল গ্লিসারিন ব্যবহার করতে হবে এবং এই সিরাপ এক থেকে দের বছরের বেশি বাচ্চাদের খাওয়ানো যাবে তার কম হলে এই সিরাপ খাওয়ানো যাবে না।
আরো পড়ুন: স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ৮ টি উপায় – স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ইসলামিক উপায় জেনে নিন
এটি তৈরির জন্য আপনাকে ১/৪ চামচ মধু ও ১/৪ চামচ লেবুর রসের সাথে ১/৪ চামচ ফুড গ্লিসারিন ভালভাবে মেশাতে হবে।এই মিশ্রণ থেকে যে সিরাপ হবে তা আপনার বাচ্চাকে খাওয়ালে আপনার বাচ্চার সর্দি ও কাঁশির উপশম হবে।আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে আপনার বাচ্চার বয়স এক থেকে দের বছর না হলে এই সিরাপ খাওয়াবেন না।
মৌরি ও মধুর সিরাপ খাওয়ান
মৌরি শ্বসন প্রণালীকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। আপনার বাচ্চার সর্দি ও কাশি উপশম করতে আপনি মৌরি ব্যবহার করতে পারেন।মৌরির বীজ দিয়ে তৈরি সিরাপ ব্যবহার করে আপনি আপনার বাচ্চার কফ, শ্বাসকষ্ট, বুকে ঘরঘর শব্দ হলে তা উপশম করতে পারেন।এতে বাচ্চার কোন ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
দের কাপ ফুটন্ত জলের সাথে এক চামচ মৌরির গুড়া দিয়ে পানিকে ভালভাবে ফুটিয়ে তারপর পানি ঠান্ডা করে তাতে একচামচ মধু মিশিয়ে সিরাপ তৈরি করে তা আপনার বাচ্চাকে খাওয়াতে পারেন।এতে আপনার বাচ্চার সর্দি ও কাঁশি উপশম হবে।
দুধ ও মধুর সিরাপ পান করান
আপনি আপনার বাচ্চাদের সর্দি থেকে এবং কাশি থেকে বাঁচানোর জন্য মধূ ও দুধের সিরাপ তৈরি করে খাওয়ালে আপনার বাচ্চার সর্দি ও কাঁশি উপশম হতে পারে।
এজন্য আপনাকে দুধ আগে ফুটিয়ে নিতে হবে তার পর সেই ফুটন্ত দুধ ঠান্ডা করে তাতে এক চামচ মধু দিয়ে সিরাপ বানিয়ে আপনি আপনার বাচ্চাকে খাওয়াতে পারেন। এত আপনার বাচ্চার সর্দি ও কাশি উপশম হতে পারে।
বুকের দুধ থাওয়ানো
বুকের দুধ খাওয়ানোর উপর বাচ্চাদের সর্দি কাশি সারানোর কোন ঔষধ নেই।বাচ্চার সর্দি অথবা কাঁশি হলে মায়ের বুকের দুধই যথেষ্ট। এজন্য তাকে নতুন করে কোন ঔষধ খাওয়ানোর দরকার নেই। তবে সর্দি কাশি হলে বাচ্চারা সচরাচর মায়ের্ দুধ খেতে ইচ্ছা করে না। এজন্য বাচ্চাকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করতে হবে।
শিশুর নাকে বুকের দুধ স্প্রে করতে পারেন
আপনি আপনার বাচ্চার সর্দি ভাল করার জন্য মায়ের বুকের দুধ বাচ্চার নাকে দিতে পারেন ।এজন্য আপনার বাচ্চার সর্দি হলে আপনি কয়েক ফোটা মায়ের দুধ বাচ্চার নাকে ঢেলে দিন। আপনার বাচ্চার সর্দি সেরে যাবে। এটি বাচ্চাদের সর্দি সারানোর জন্য তেমন একটি প্রচলিত নিয়ম নয়।
স্যালাইনের ব্যবহার
আপনি আপনার বাচ্চাদের সর্দি সারানোর জন্য স্যালাইনের ব্যবহার করতে পারেন। এজন্য বাজার থেকে ভাল মানের একটি স্যালাইন কিনে সেই সেলাইনের নুন-জল আপনার বাচ্চার নাকে দিতে পারেন। এতে আপনার বাচ্চার নাক পরিস্কার হয়ে যাবে এবং সর্দি সেরে যাবে।
বাচ্চার মাথা উঁচু রাখার ব্যবস্থা করতে হবে
সর্দি হলে বাচ্চাদের সব থেকে বড় সমস্যা হলো নাক বন্ধ থাকার জন্য তারা ভালোমতো ঘুমাতে পারে না। এজন্য বাচ্চাদের যেন ঘুমাতে কোন সমস্যা না হয় এজন্য বাচ্চাদের মাথা উচু রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
সরিষার তেল মালিশ করা
বাচ্চাদের সর্দির সময় বাচ্চাদের নাকে সরিষার তেল দিলে তারা সর্দি থেকে আরাম পায়। সর্দি হলে বাচ্চাদের সরিষার তেল মালিশ করতে হবে। এতে তাদের সর্দি উপশম হয়।
আরো পড়ুন: হেঁচকি বন্ধ করার উপায়-হেঁচকি বন্ধ করার দোয়া
নারকেল তেল ও সজনের পাতা মিশ্রন
নারকেল তেল ও সজনের পাতা নারকেল তেলে ভেজে তা বাচ্চাকে মালিশ করলে তার সর্দি উপশম হয়। তা্ই আপনার বাচ্চার সর্দি উপশম করার জন্য আপনি নারকেল তেল ও সজনের পাতার মিশ্রন করে তা মালিশ করতে পারেন।এতে আপনার বাচ্চার সর্দি ও কাঁশি উপশম হবে।
ভেষজ নারকোল তেল ও তুলসি পাতার মিশ্রন
আপনি আপনার বাচ্চার সর্দি ও কাঁশি থেকে বাঁচাতে নারকেল তেল ও তুলসি পাতার মিশ্রন ব্যবহার করতে পারেন। এজন্য আপনাকে নারকেল তেলের সাথে তুলসি পাতা ভাজতে হবে।এতে তুলসি পাতার ভেষগুণ তেলের সাথে মিশে যাবে। তারপর সেই তেল আপনার বাচ্চার বুকে ও পিঠে মালিশ করলে আপনার বাচ্চার সর্দি ও কাঁশি উপশম হবে।
নবজাতকের সর্দি কাশি হলে করণীয় – নবজাতক শিশুর সর্দি হলে করণীয়
সুপ্রিয় পাঠক, এখন আমি নবজাতক শিশুর সর্দি হলে করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করবো। আপনি যদি নবজাতক শিশুর সর্দি হলে করণীয় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আর্টিকেলের এ অংশটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি নবজাতক শিশুর সর্দি হলে করণীয় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আর্টিকেলের এ অংশটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন। চলূন নবজাতক শিশুর সর্দি করণীয় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
- ঠান্ড থেকে বাঁঁচতে গরম কাপড় দিয়ে ঢেকে দিতে হবে যাতে ঠান্ডা লাগতে না পারে।
- নবজাতক শিশুকে ঠান্ডা লাগেলে হাঁপানি হতে পারে। এতে শিশুর ঘনঘন কাঁশি হতে পারে। এজন্য চিকিৎসকের শরনাপন্ন হতে হবে।
- শিশুকে টিকা প্রদান করতে হবে।
- সর্ব অবস্থায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।
- বুকের দুধ সহ স্বাভাবিক খাবার নিয়মিত খাওয়াতে হবে। কোন অবস্থা খাদ্য গ্রহণ করানো থেকে বিরত থাকা যাবে না।
- শিশুকে গরম রাখার জন্য গরম কাপড় পরিধান করাতে হবে।
- শিশুর নাক ও কপালের উপরের অংশ তেল দিয়ে ম্যাসেজ করতে হবে।
- সরিষার তেল দিয়ে শরীর মালিশ করাতে হবে। সবথেকে ভাল হয় অলিভ অয়েল দিয়ে শিশুর শরীর মালিশ করলে।
- ভিটামিন সি খাবার বেশি বেশি করে খাওয়াতে হবে।ভিটামিন সি শিশুর ঠান্ডা জনিত রোগ নিরাময়ে সহায়ক।
- রসূন মিশ্রিত তেল মালিশ করতে হবে।
- ঘনঘন বুকের দুধ খাওয়াতে হবে।
- শিশুকে সঠিক ও পর্যাপ্ত ঘুমের ব্যবস্থা করতে হবে।
- উষ্ণ গরম গরম পানিতে গোসল করাতে হবে।
বাচ্চাদের সর্দি হলে কি খাওয়া উচিত – ৩ মাস শিশুর সর্দি হলে করণীয়
সুপ্রিয় পাঠক এতক্ষণ আমি নবজাতক শিশুর সর্দি হলে করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করেছি। এখন আমি বাচ্চাদের সর্দি হলে কি খাওয়া উচিত এই সম্পর্কে আলোচনা করবো। আপনি যদি বাচ্চাদের সর্দি হলে কি খাওয়া উচিত জানতে চান তাহলে আর্টিকেলের এ অংশটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। চলুন আর দেরি না করে বাচ্চাদের সর্দি হলে কি খাওয়া উচিত জেনে নেওয়া যাক।
- বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। ছয় মাসের কম নবজাতক শিশুকে যে কোন সুস্থতায় মায়ের বুকের দুধ সবচেয়ে বড় ঔষধ।
- বার্লি মিশ্রিত জল খাওয়াতে পারেন।
- আপেলের রস বা আচার খাওয়াতে পারেন।
- ভাতের ফ্যান খাওয়াতে পারেন।
- মিষ্টি আলু সিদ্ধ করে খাওয়াতে পারেন।
- গাজর সিদ্ধ করে খাওয়াতে পারেন।
- ডালিমের রস করে খাওয়াতে পারেন।
- দই-ভাত খাওয়াতে পারেন।
- সাবু দানার রেসিপি করে খাওয়াতে পারেন।
- টমেটো স্যুপ করে খাওয়াতে পারেন।
- লেবু জাতীয় ফল খাওয়াতে পারেন।
- মাশরুপ স্যূপ খাওয়াতে পারেন।
বাচ্চাদের সর্দি কাঁশির সিরাপ – বাচ্চাদের সর্দি কাঁশির ঔষধের নাম – বাচ্চাদের সর্দির ওষুধ
সুপ্রিয় পাঠক, এখন বাচ্চাদের সর্দি কাশির সিরাপ নিয়ে আলোচনা করবো। আমি আপনাদের জ্ঞাতার্থে বলে রাখি শুরুতে বাচ্চাদেরকে সর্দি কাশির সিরাপ খাওয়ানো উচিত নয়। এতে তারা নানা রকম জটিলতায় ভুগতে পারে। এজন্য সর্দির জন্য বাচ্চাদের সর্দি কাশির সিরাপ খাওয়ানো থেকে বিরত থকাটাই মঙ্গল। তবে খাওয়ালে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়াতে হবে। তবু আমি আপনাদের সুবিধার জন্য কিছূ সিরাপের নাম শেয়ার করছি।
- তুশকা প্লাস সিরাপ
- এডোভাস সিরাপ
- বোক্সল সিরাপ
- রেমোকফ সিরাপ
- ওকফ সিরাপ
- এমব্রক্স সিরাপ
- নেকটার সিরাপ
- মধুভাস সিরাপ
পরিশেষে: ছোট বাচ্চারে সর্দি হলে করণীয় – নবজাতক শিশুর সর্দি হলে করণীয়
আশা িকরি আপনি ছোট বাচ্চাদের সর্দি হলে করণীয়, নবজাতক শিশুর সর্দি হলে করণীয়, নবজাতকের সর্দি হলে করণীয়, বাচ্চাদের সর্দি হলে কি থাওয়া উচিত, ৩ মাস শিশুর সর্দি হলে করণীয়, বাচ্চাদের সর্দি কাশির সিরাপ, বাচ্চাদের সর্দি কাশির ঔষধের নাম, বাচ্চাদের সর্দির ওষুধ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আমাদের এই পোাস্টটি আপনার ভাল লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন। এই ধরনের আর্টিকেল পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।