সুপ্রিয় পাঠক, আজকে আমি মাসিকের ব্যাথা কমানোর কার্যকরী উপায়, এবং মাসিকের ব্যাখা কমানোর ঔষধ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করতে চলছি। আপনি যদি মাসিকের ব্যাথা কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের পোস্টটি আপনার জন্য।

মাসিকের ব্যাথা কমানোর উপায়

তাই মাসিকের ব্যাথা কমানোর কার্যকরী উপায় সম্পর্কে জানতে পুরো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। চলুন আর দেরি না করে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।

Table of Contents

পেজ সূচিপত্র:

পিরিয়ড বা মাসিক কি তা জেনে নিন

পিরিয়ড বা মাসিক এমন একটি প্রকৃয়া, যে প্রকৃয়ায় স্তন্যপায়ী প্রাণিরা (স্ত্রীলিঙ্গ) সন্তান ধারণের জন্য উপযুক্ত হয়। আরো বিস্তারিত বলতে গেলে হরমনের প্রভাবে একজন মহিলার প্রতিমাসে তার জরায়ু দিয়ে যে রক্ত বা স্রাব বের হয় তাকে ঋতুস্রাব, মাসিক বা ইংরেজিতে পিরিয়ড বলে।এসময় তাদের জরায়ুতে ডিম্বানু উৎপন্ন হয়।

মাসিক বা পিরিয়ড কেন হয় তার কারণ জেনে নিন

একজন মহিলা যখন সন্তান প্রজননের জন্য উপযুক্ত হয় তখন তার ঋতুস্রাব/মাসিক/পিরিয়ড হয়ে থাকে।একজন মহিলা যখন প্রাপ্ত বয়স্ক হন তখন প্রথমে তার ডিম্বানুর স্ফুটন হয় এবং ডিম্বানুটি ফ্যালোপিয়ান টিউবের মাধ্যমে তার জরায়ুতে যায়।সেখানে ডিম্বানুটি ৩/৪ দিন তার জরায়ুতে অবস্থান করে। 

See also  ফ্রি এমবি পাওয়ার উপায় - ফ্রি ইন্টারনেট কোড জেনে নিন

এসময় মহিলা যদি কোন পুরুষের সাথে মিলিত না হন তখন আর ডিম্বানুটি নিষিক্ত করা যায় না।ফলে এটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং জরায়ুর ভেতরে এন্টোমেট্রিয়াম স্তরে ভেঙ্গে যেতে থাকে। এই ভাঙ্গা ঝিল্লি, শ্লেষ্মা, ও রক্তবাহি রক্ত হতে উৎপন্ন রক্তসহ একত্রিত হয়ে তরল পদার্থে রুপান্তরিত হয়।পরবর্তীতে এটি যোনি থেকে ঝরতে শুরু যাকে আমরা মাসিক বা পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব বলে থাকি।

মাসিকের সময় ব্যাথা কেন হয়- পিরিয়ডের সময় ব্যাথ্যা কেন হয়

মাসিকের সময় মেয়েদের তলপেটে ব্যাথা হয়ে থাকে। এমন কেন নারী নেই যার মাসিক চলাকালে কমবেশি পেটে ব্যাথা নেই। আপনি যদি নারী হয়ে থাকেন তাহলে আপনিও এই ব্যাথা ভোগ করেছেন। কিন্তু আপনি কি জানেন মাসিকের সময় তল পেটে ব্যাথা কেন হয়। যদি না জেনে থাকেন তাহলে পোস্টটি পড়তে খাকুন ।কারণ এখন আমি মাসিকের সময় মেয়েদের তলপেটে ব্যাথা কেন হয় তা বিস্তারিত আলোচনা করবো।

পিরিয়ড বা মাসিক শুরু হওয়ার আগেই জরায়ুর সংকোচের কারণে মেয়েদের তলপেটে ব্যাথা হয়ে থাকে। আর এসময় তলপেটে ব্যাথা হওয়া একটি স্বাভাবিক ব্যাপার । কিন্তু কখনো কখনো আপনার এ ব্যাথাটি তীব্র হয়ে থাকে।চলুন জেনে নেওয়া যাক  এর কারণ কি?

আরো পড়ুন: নগদ কল সেন্টার সম্পর্কে জেনে নিন

প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন নামক হরমোনের কারণে মেয়েদের জরায়ু সংকোচিত হয়ে থাকে। যদি কোন মেয়ের শরীরে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন এর মাত্রা বেশি মাত্রায় থাকে তাহলে তার জরায়ু বেশি সংকোচিত হয় এবং তার তলপেটে তীব্র ব্যাথা অনুভব করে।এছাড়া কারো কারো কোন কারণ ছাড়াই তলপেটে ব্যাথা হয়ে থাকে।

মাসিকের ব্যাথা কোথায় হয়- পিরিয়ডের ব্যাথা কোথায় হয় জেনে 

পিরিয়ডের ব্যাথা সাধারণত তলপেটে হয়ে থাকে। তবে মাঝে মাঝে তা কোমরে ও উরুতেও ছড়িয়ে যায়।তবে যাদের তলপেটে তীব্র ব্যাথা অনুভূত হয় তাদের ব্যাথাটি মাঝে মাঝে কামড়ে ধরা বা খিঁচ ধরার মতো হয়ে থাকে। তবে অনেক সময় ঝিঁ ধরার মতো ব্যাথা হতে পারে। কোন কোন মাসে সামান্য ব্যাথাতেই মাসিকের ব্যাথা শেষ হয়ে থাকে। 

মাসিকের ব্যাথা কতক্ষণ স্থায়ী হয় – পিরিয়ডের ব্যাথা কতক্ষণ ধরে হয়ে থাকে

প্রিয়পাঠক, এখন আমি আলোচনা করবো মাসিকের ব্যাথা বা পিরিয়ডের ব্যাথা কতক্ষণ স্থায়ী হয়ে থাকে। সাধারণত মেয়েদের মাসিক হওয়ার কিছুদিন আগে থেকেই শুরু হয়। তবে কারো কারো মাসিক হওয়ার কিছুক্ষণ আগে থেকেই হয়ে থাকে। সাধারণত মাসিকের ব্যাথ্যার স্থায়ীত্ব রক্তক্ষরণের উপর নির্ভর করে। যার রক্তক্ষরণ বেশি হয় তার মাসিকের ব্যাথ্যা বেশি সময় ধরে হয়ে থাকে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ৪৮/৭২ ঘন্টা পর্যন্ত স্থায়ী হয়ে থাকে।

See also  প্রেশার লো হলে করণীয় ১০টি কাজ - প্রেশার লো এর ১৫ লক্ষণ

আরো পড়ুন: হোটাসঅ্যাপ ম্যাসেজ ডিলিট করার উপায় জেনে নিন

 যেসব মেয়েদের প্রথম প্রথম মাসিক হয়ে থাকে তাদের মাসিক হওয়ার প্রায় সময় ধরে ব্যাথ্যা হয়ে থাকে । তবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে তাদের ব্যাথার স্থায়ীত্ব কমতে থাকে। 

মাসিকের ব্যাথা কমানোর উপায় জেনে নিন- মাসিকের  ব্যাথা কমানেরা ঘরোয়া উপায়গুলো জেনে নিন

মাসিকের সময় ব্যাথা হওয়া মেয়েদের একটি স্বাভাবিক বিষয়। প্রায় প্রতিটি নারীই এ ব্যাথ্যা অনূভবের স্বীকার হয়ে থাকে ।এটি স্বাভাবিক হওয়ার কারণে এটির প্রতিকার করতে খুব একটা উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। ঘরে বসেই এ ব্যাথ্যা উপশম করা যায়। প্রিয় পাঠক এ পর্যায়ে আমি বিস্তারিত আলোচনা করবো কিভাবে আপনি ঘরোয়াভাবে মাসিকের ব্যাথা কমাতে পারেন। চলুন আর দেরি না করে শুরু করা যাক:

পেটে সেঁক দিন: মাসিকের ব্যাথা কমানোর জন্য একটি কার্যকরী ঘরোয়া উপায় হলো পেটে গরম কিছু দিয়ে সেঁক দেওয়া। এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো অন্যান্য ঔষধের মতো এর কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। খুব সহজে আপনি পেটে সেঁক দিয়ে মাসিকের ব্যাথা উপশম করতে পারেন।

মাসিকের সময় আদা সেবন করুন: মাসিকের সময় আদা সেবন করা মাসিকের ব্যাথা কমানোর জন্যে একটি কার্যকরী পদ্ধতি। আদার মধ্যে মাসিকের ব্যাথা কমানোর ওধুধী গুন রয়েছে। মাসিকের সময় প্রথম৩/৪ দিন আদা কুচি করে কেটে চা অথবা গরম পানি খেলে ব্যাথা উপশম হয়।

মাসিকের সময় শ্বাসের ব্যায়াম করুন: মাসিকের ব্যাথা কমানোর আর একটি কার্যকরী উপায় হলো শ্বাসের ব্যায়াম করা।এজন্য প্রথমে আপনি বুকের উপর এক হাত ও পেটের উপর এক হাত দিয়ে হালকা করে চেপে ধরুন ও  এমনভাবে নিশ্বাস নিন যাতে বাতাস বুকের গভীরে ঢুকতে পারে এবং পেট ফুলে উঠে। তারপর মুখ দিয়ে আস্তে আস্তে বাতাস ছাড়ুন। এভাবে মাসিকরে সময় প্রতিদিন ব্যায়াম করলে মাসিকের ব্যাথা উপশম হয়।

মাসিকের সময় পেট ম্যাসাজ করুন: মাসিকের সময় পেট ম্যাসাজ করা ব্যাথা কমানোর একটি কার্যকরী উপায় হিসাবে গবেষনায় উঠে এসেছে । এভাবে পেট ম্যাসাজের মাধ্যমেও আপনি মাসিকের ব্যাথা কমাতে পারেন।

See also  নন-ফলোয়ারদের আনফলো করার সেরা 5টি টুইটার টুলস 2022

মাসিকের সময় গরম পানি দিয়ে গোসল করুন: মাসিকের সময় গরম পানি দিয়ে গোসল মাসিকের ব্যাথা কমাতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। আপনি যদি মাসিকের সময় গরম পানি দিয়ে গোসল করেন তাহলে অটোমেটিক পেটের ব্যাথা কমে যায়।

মাসিকের ব্যাথা কমানোর ঔষধেগুলো কী জেনে নিন

সুপ্রিয় পাঠক, ্এবার আমি মাসিকের ব্যাথা কমানোর হোমিও ঔষধ ও মাসিকের ব্যাথা কমানোর ঔষধ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। তাই মাসিকের ব্যাথা কমানোর েহোমিও ঔষধ ও মাসিকের ব্যাথা কমানোর ঔষধ সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন।

আইবুপ্রোফেন : মাসিকের সময় এ ওষুধ সেবন মাসিকের ব্যাথা কমানোর জন্য একটি কার্যকরী ঔষধ। কেননা এ ঔষধ সেবন করার ২০/৩০ মিনিটের মধ্যেই ব্যাথা কমে যায়।

অ্যাসপিরিন: মাসিকের ব্যাথা কমানোর জন্য অ্যাসপিরিন খুবই কার্যকরী । মাসিকের ব্যাথার সময় এটি সেবন করলেও ২০/৩০ মিনিটের মধ্যে ব্যাথা উপশম হয়।

প্যারাসিটামল: মাসিকের ব্যাথা কমাতে প্যারাসিটামল অধিক ব্যবহার হয়ে থাকে। এটি সেবনের মাধ্যমেও আপনি মাসিকের ব্যাথা কমাতে পারেন।

মাসিকের ব্যাথা কমানোর হোমিও ঔষধ সম্পর্কে জেনে নিন

সুপ্রিয় পাঠক, এবার  আমি মাসিকের ব্যাথা কমানোর হোমিও ঔষধ ও মাসিকের ব্যাথা কমানোর ঔষধ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। তাই মাসিকের ব্যাথা কমানোর হোমিও ঔষধ ও মাসিকের ব্যাথা কমানোর ঔষধ সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন।

 ম্যাগনেসিয়া ফস: মাসিকের সময় ব্যাথা কমানোর একটি কার্যকরী হোমিও ঔষদ হলো ম্যাগনেসিয়া ফস। মাসিকের ব্যাথা কমানোর জন্য আপনি এ ঔষধটি সেবন করতে পারেন।

রেসিমোসো: মাসিকের সময় যদি আপনার তলপেট ও কোমর একসাথে ব্যাথা অনুভূত হয় তাহলে আপনি রেসিমোসো সেবনের মাধ্যমে ব্যাথা থেকে মুক্তি লাভ করতে পারেন।

ক্যামোমিলা: মাসিকের সময় অসহ্য ব্যাথা ও ছটফটানি উঠলে আপনি ক্যামোমিলা নামক হোমিও ঔষধটি সেবনের মাধ্যমে দ্রুত উপশম পেতে পারেন। 

কলোফাইলাম: মাসিকের ব্যাথা কমোনেরা একটি জনপ্রিয় ও কার্যকরী হোমিও ঔষধ হলো কলোফাইলাম। এটি সেবন করেও আপনি মাসিকের ব্যাথা উপশম করতে পারেন। 

বি.দ্র: উপরোক্ত ঔষধে সেবনের পূর্বে অবশ্যই রিজিস্ট্রাট চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তারপর সেবন করবেন। অন্যথায় কোন জটিলতায় আমি বা আমার আর্টিকেল দায়ী থাকবো না। 

পিরিয়ডের ব্যাথা কমানোর ইসলামিক উপায় জেনে নিন। মাসিকের ব্যাথা কমানোর দোয়া কি তা জানুন

প্রিয়পাঠক বন্ধু এবার আমি পিরিয়ডে ব্যাথা কমানোর ইসলামিক উপায় সম্পর্কে আলোচনা করবো। ইসলাম পূনাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। এখানে মানুষের জীবনের সকল জটিলতার সমাধান দেওয়া আছে।ইসলামে অন্যান্য বিষয়ের মতো মাসিকের ব্যাথা কমানোর উপায় সম্পর্কে বলেছেন। এজন্য ইসলাম মাসিকের সময় ব্যাথা অনুভূত হলে তার জন্য দোয়া পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। 

আরো পড়ুন: নগদ একাউন্ট খোলার নিয়ম জেনে নিন

মাসিকের সময় ব্যাথা কমানোর দোয়া:পিরিয়ডে ব্যাথা কমানোর ইসলামিক উপায়:

”আউজু-বি ইজ্জাতিল্লাহি ওয়া কুদরাতিহি মিন শারমি মা আজিদু ওয়া উহাজিরু”  মেয়েদের মাসিক হলে ইসলাম এ দোয়াটি পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন যার অর্থ “আল্লাহর মর্যাদা ও তার কুদরতির উছিলায় আমি যা অনুভব বা ভোগ করছি, তা থেকে মুক্তি চাচ্ছি”

মাসিকরে ব্যাথা কমানোর ইসলামিক উপায় ও পিরিয়ডের দোয়া : শেষ বক্তব্য

আশা করি আপনি মাসিকের ব্যাথা কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছেন।এও জানতে পেরেছেন যে মাসিকের ব্যাথা কমানোর ঔষধগুলো কি। আশা করি আমার এ পোস্টটি আপনার যথেষ্ট ভাল লেগেছে।আর্টিকেলটি ভাল লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন।