সুপ্রিয় পাঠক, আজকে আমি প্রেশার লো হলে করণীয় কি সে সম্পর্কে বিন্তারিত আলোচনা করবো। আপনি যদি প্রেশার লো হলে করণীয় কি সে সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের পোস্টটি আপনার জন্য। প্রেসার লো বা নিম্নরক্তচাপ যে কারো শরীরের জন্য মারাত্রক ক্ষতিকর।
তাই প্রেশার লো কেন হয়? প্রেশার লো হলে করণীয় কি বা আপনি কিভাবে প্রেশার লো থেকে আপনি বাঁচতে পারেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করতে চলছি আজকের এ পোস্টে। তাই চলুন আর দেরি না করে মূল আলোচনা শুরু করা যাক।
পেজ সূচিপত্র
- প্রেশার লো কি?
- লো-প্রেশার কেন হয়।লো প্রেসার কখন হয়
- প্রেশার লো হওয়ার লক্ষণগুলো জেনে নিন
- প্রেশার লো হলে কী খেতে হবে জেনে নিন
- প্রেশার লো হলে করণীয় সমূহ কি তা জানুন
- ইতিকথা
প্রেশার লো কি?
চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুযায়ী একজন স্বাভাবিক লোকের প্রেশার ১২০/৮০ হয়ে থাকে। যাকে নরমাল প্রেশার বলা হয়।যদি কোন কারণে সেই প্রেশার কমে ৯০/৬০ এ নেমে আসে তাকে হাইপোটেনশন/নিম্নরক্তচাপ/লো প্রেশার বলা হয়ে থাকে। লো প্রেশার কোন মারাত্মক সমস্যা না হলেও এর প্রভাবে শরীরের নানা রকম জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। কিছু কিছু লোকের লো প্রেশার তেমন কিছু ক্ষতি সাধন করতে না পারলেও কিছু কিছু লোকের জন্য তা মারাত্মক শরীর খারাপের কারণ হতে পারে। তাই আগে থেকেই সতর্ক হওয়া বাঞ্ছণীয়।
আরো পড়ুন: এস.ই.ও কি? বিস্তারিত জেনে নিন
লো-প্রেশার কেন হয়।লো প্রেসার কখন হয়
লো-প্রেশার কী আশা করি আপনি জানতে পেরেছেন। অবশ্যই আপনার মনে একটি প্রশ্নই ঘুরে ঘুরে আসছে যে লো-প্রেশার কেন হয় বা লো- প্রেশার কখন হয় ? তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক লো-প্রেশার হওয়ার কারণ কী বা কেন হয়।
- আপনি যদি হঠাৎ মারাত্মক কোন শক পান তাহলে আপনার শরীরের রক্তসঞ্চালন কমে যেতে পারে এবং আপনার প্রেশার লো হতে পারে।
- আপনি হার্টের সমস্যায় ভোগেন এবং কোন কারণে আপনার হার্ট এট্যাক হয় তাহলে হঠাৎ আপনার প্রেশার লো হতে পারে।
- আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন তাহলে প্রথম চব্বিশ সপ্তাহ আপনার প্রেশার লো হতে পারে।
- দীর্ঘক্ষণ যাবৎ ওয়ার্ক – আউট করলেও প্রেশার লো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- অনিয়মিত খাবার গ্রহন, অপুষ্টিতে ভোগা এবং দীর্ঘদিন ধরে একই ঔষধ গ্রহণ করার ফলেও প্রেশার লো হতে পারে।
- শরীরে পানিশূণ্যতা তৈরি হলে প্রেশার লো হয়।
- অনিয়মিত ঘুম ও পর্যাপ্ত ঘুম না হলে প্রেশার লো হয়।
- শরীরে পর্যাপ্ত রক্ত না থাকলে রক্তশূণ্যতার কারণে প্রেশার লো হয়।
প্রেশার লো হওয়ার লক্ষণগুলো জেনে নিন
শারীরিক দুর্বলতা: শরীরে সবসময় দূর্বলতা অনুভব করা লো -প্রেশারের প্রকৃত লক্ষণ হিসাবে ধরা হয়।
মাথায় ঝিম ধরা: যদি কোন কারণ ছাড়াই মাথায় ঝিম ধরা ভাব বোঝা যায় তাহলে প্রাথমিকভাবে বুঝে নিতে হবে এটি প্রেশার লো হওয়ার কারণে হচ্ছে। মাথায় ঝিম ধরা লো-প্রেশারের একটি প্রকৃত লক্ষণ।
শারীরিক ক্লান্ত ও অবসন্ন: শরীরে অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভব করা ও শরীর অবসন্ন হয়ে আসা প্রেশার লো হওয়ার লক্ষণ।
হঠাৎ মাথা ঘোরা: হঠাৎ যদি মাথা ঘুরে তাহলে তা প্রকৃতপক্ষে প্রেশার লো হওয়ারই লক্ষণ। তাই আপনার যদি হঠাৎ মাথা ঘুরা শুরু হয় তাহলে আপনাকে বুঝে নিতে হবে আপনার প্রেশার লো হয়েছে।
আরো পড়ুন: শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কবে তা জানুন
অজ্ঞান হওয়া: আপনার যদি হঠাৎ অজ্ঞান হওয়ার প্রবণতা দেখা দেয় তাহলে আপনার প্রেশার লো হওয়ার কারণেই তা হচ্ছে এরুপ বুঝে নিতে হবে।অর্থাৎ অজ্ঞান হওয়ার প্রবণতা প্রেশার লো হওয়ার লক্ষণ।
বমি বমি ভাব: হঠা’ যদি আপনার শরীরে গা গলোনো ভাব বা বমি বমি ভাব দেখা দেয় তাহলে তা প্রেশার লো হওয়া লক্ষণ।
পানির পিপাসা ও ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়া: আপনার যদি ঘন ঘন পানির পিপাসা হয় ও ঠোঁট শুকিয়ে যায় তাহলে তা প্রেশার লো হওয়ার লক্ষণ।
প্রেশার লো হলে কী খেতে হবে জেনে নিন।প্রেশার লো কমানোর ঘরোয়া উপায়
উচ্চ রক্তচাপ ও নিম্ন রক্তচাপ এখন মানুষের স্বাভাবিক রোগের মতোই একটি বিষয়। বেশির ভাগ লোকেই হয় উচ্চ রক্তচাপ না হলে নিম্ন রক্তচাপে ভোগে। আপনি যদি লো -প্রেশারে ভুগে থাকেন তাহলে প্রেশার লো হলে করণীয় কি বা প্রেশার লো কমানোর ঘরোয়া উপায় গুলো কি সে বিষয়ে জানতে চাইলে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। এখন আমি সে বিষয়গুলো নিয়েই আলোচনা করবো। চলুন আলোচনা শুরু করা যাক:
লবন পানি পান করা: লবন রক্তচাপ বাড়ায়। তাই প্রেশার লো হলে পরিমান মতো লবন পানি পান করলে রক্তচাপ স্বাভাবিক হয়। এ জন্য সবচেয়ে ভাল হয় একগ্লাস পানির মধ্য দুচামচ চিনি ও দুচামচ লবন মিশিয়ে শরবত করে পান করা । তবে যাদের ডায়াবেটিকস আছে তাদের চিনি বর্জন করতে হবে।
কফি পান করা: লো-প্রেশার রোগীদের জন্য কফি একটি পান করা একটি কার্যকর পদ্ধতি।যারা প্রায় লো-প্রেশার এ ভোগেন তারা প্রতিদিন নাস্তার পর কফি খাওয়া অভ্যাস করলে খুব সহজে এ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবে।
আরো পড়ুন: ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জসমূহ জেনে নিন
নিয়মিত কিচমিচ খান: হাইপোটেনশনের জন্য প্রাগঐতিহাসিক কাল থেকে অব্যর্থ ঔষধ হিসাবে কার্যকরী ভূমিকা রেখে চলছে কিচমিচ। এজন্য আপনি সারারাত পানিতে কিচমিচ ভিজিয়ে সকালে খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।
পুদিনা পাতা সেবন: পুদিনা পাতাতে ভিটামিন সি, ম্যাগনেসিয়াম ও পটাসিয়াম রয়েছে যা দ্রুত ব্লাড প্রেশার বাড়ানোর কাজ করে । এবং মানসিক অবসাদ দূর করার জন্যও ব্যবহার করা হয়ে থাকে।এজন্য পুদিনা পাতার রস খেতে হবে।
প্রেশার লো হলে করণীয় সমূহ কি তা জানুন।প্রেশার লো হলে কী খেতে হবে জেনে নিন
- উচ্চ রক্তচাপের ঔষুধ খেতে থাকলে তা সাময়িকভাবে বন্ধ করুন।
- বেশি করে পানি পান করুন। সেলাইন তৈরি করেও পান করতে পারেন।
- বিছানায় ছ’ফুট উচু বালিশে ঘুমান।
- খাবার একবারে না খেয়ে অল্প অল্প করে বার বার খান।দাড়াঁনোর সময় আস্তে আস্তে দাড়াঁন।
- প্রচুর পরিমান পুষ্টিকর খাবার গ্রহন করুন।
- তাজা শাকসবজি খাওয়ার অভ্যাস করুন।
- নিয়মিত মধূ পান করুন
- সর্বোপরি সকল অবস্থায় টেনশন মুক্ত থাকুন।
ইতিকথা: প্রেশার লো হওয়ার কারণ জেনে নিন। প্রেশার লো হওয়ার লক্ষণ জানুন। প্রেশার লো হলে করণীয় কি তা জানুন
আশা করি প্রেশার লো হলে করণীয় কি, কেন প্রেশার লো হয়, প্রেশার লো হওয়ার লক্ষণ সমূহ বিন্তারিত আপনি জানতে পেরেছেন। আমি আজকের এ পোস্টের মাধ্যমে প্রেশার লো হওয়ার কারণ, প্রেশার লো হওয়ার লক্ষণ ও প্রেশার লো হলে করণীয় কি তা জানাতে পেরে আমার ও বেশ ভাল লাগছে। আমার এ পোস্টটি আপনার ভাল লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন।