আস সালামু আলাইকুম বন্ধুরা । প্রতি বছর নির্দিষ্ট একটি দিনে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালিত হয়। জাতিসংঘের নির্দেশনায় সারা বিশ্বে এ দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে। আজকের এ আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি বিশ্ব মানবাধিকার দিবস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।চলুন, বিশ্ব মানবাধিকার দিবস কবে তা জেনে নেওয়া যাক।
সূচিপত্র
- বিশ্ব মানবাধিকার দিবস কী? বিশ্বমানবাধিকার দিবস কবে?
- মানবাধিকার কী?
- বিশ্ব মানবাধিকার দিবস
- বিশ্ব মানবাধিকার দিবস কোনটি?
- আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন pdf
- আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন
- বিশ্ব মানবাধিকার দিবস – বিশ্ব মানবাধিকার দিবস কবেঃ শেষ কথা
বিশ্ব মানবাধিকার দিবস কী? বিশ্বমানবাধিকার দিবস কবে?
মানবাধিকার বলতে সার্বজননীন মানব অধিকারকে বোঝায়। মানবাধিকার মানুষের এমন এক ধরণের অধিকার যে অধিকার জন্মগতভাবে স্বীকৃত ও পৃথিবীর সকল মানুষ তা সমানভাবে ভোগ করে থাকে। অর্খাৎ মানবাধিকার পৃথিবীর সকল মানুষের জন্য সমান।মানবাধিকার কোন জাতি, গোষ্ঠীর একক কোন অধিকার নয় ।মানবাধিকার পৃথিবীর সকল মানুষের জন্য এক ও অভিন্ন।
আজকের এ আর্টিকেলে আমি মানবাধিকার দিবস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো ইনশাল্লাহ। তাই মানবাধিকার দিবস সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন।চলুন আর দেরি না করে শুরু করা যাক।
মানবাধিকার কী?
যেসব অধিকার একান্তভাবে মানুষের জন্য সেসব অধিকারকে মানবাধিকার বলা হয়। পৃথিবীতে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী রয়েছে, সেদিক থেকে মানুষও একপ্রকার প্রাণী । কিন্তু মানুষ প্রাণী হলেও অন্যান্য প্রাণী থেকে মানুষ সম্পূর্ন আলাদা। মানুষের বিবেকবোধ অন্যান্য প্র্রাণী থেকে মানুষকে আলাদা করেছে। পৃথিবীর সকল মানুষকে একটি জাতি ও পরিবার মূল্যায়ন করে শুধু মানুষ হিসাবে তার যে সর্বজনীন অধিকার রয়েছে সেগুলোকে মানবাধিকার বলে। বিশ্ব মানবাধিকার দিবস সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়তে থাকুন।
বিশ্ব মানবাধিকার দিবস
১৯৪৮ সালের ১০ ই ডিসেম্বর থেকে সারা বিশ্বব্যাপি বিশ্বমা্নবাধিকার দিবস পালন করা হয়ে থাকে। জাতিসংঘের বিশেষ এক নির্দেশনায় সারা বিশ্বব্যাপি ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালিত হয়ে থাকে। জাতিসংঘ সার্বজনীন মানবাধিকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ দিবসটি পালন করে থাকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর নব নির্মত জাতিসংঘের বৃহৎ একটি অর্জন হচ্ছে এই সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষনা।
১০ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রতিটি দেশে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালন করা হয়ে থাকে। মানবাধিকার সংক্রান্ত বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে এদিনটি সারা বিশ্বে পালন করা হয়ে থাকে। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও এ দিনটি বিশেষ তাৎপর্য সহকারে পালন করে থাকে। এ দিন বিভিন্ন মানবাধিকার বিষয়ক কর্মসূচি প্রদান করা হয় ও বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি পৃথক পৃথক বাণী প্রদান করে থাকে।
“বৈষম্য ঘোচাও, সাম্য বাড়াও, মানবাধিকার সুরক্ষা দাও” গত বছর ছিল এটি বিশ্ব মানবাধিকার দিবসের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়। এবারের মানবাধিকার দিবসে আসুন আমরা অঙ্গিকার করি সর্বচ্চ মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করি।
বিশ্ব মানবাধিকার দিবস কোনটি?
সুপ্রিয় পাঠকগণ ইতিমধ্যে আপনারা বিশ্ব মানবাধিকার দিবস সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন। কিন্তু বিশ্ব মানবাধিকার দিবস মূলত করে সে সম্পর্কে একটু দ্বিধা রয়েছে। বিশ্ব সঠিক মানবাধিকার দিবস সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন। জেনে নিন বিশ্ব মানবাধিকার দিবস কবে।
১০ ডিসেম্বর ১৯৪৮ সাল থেকে জাতিসংঘ সহ বিশ্বের সকল দেশ বিশ্বমানবাধিকার দিবস পালন করে আসছে। ১০ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রতিটি দেশ বিশেষ গুরুত্ব ও তাৎপর্যের সাথে এ দিনটি পালন করে থাকে। ব্যাতিতক্রম হিসাবে শর্পেভিল গণহত্যাকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ আফ্রিকা ২১ মার্চ এ দিনটি পালন করে থাকে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন pdf
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সিদ্ধান্ত নং ২১৭(১১১) এ ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন গ্রহণ ও ঘোষনা করা হয়। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন কিছু নিয়ম পদ্ধতি বা প্রথাকে কেন্দ্র করে গঠিত যেগুলো সংঘাতের সময় পক্ষ থাকে তাদের পছন্দ অনুযায়ী সংঘাতের পদ্ধতিগুলোকে সীমিত করা হয়।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনে রয়েছে কিছু সাধারণ নিয়ম যেগুলো সবার ক্ষেত্রে সবসময় প্রযোজ্য, সেইসাথে রয়েছে কিছু বিশেষ নিয়ম যেগুলো কিছু নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে প্রযোজ্য, যেমন সশস্ত্র সংঘাত ও সামরিক দখল (যথা, আন্তর্জাতিক মানবিক আইন), অথবা কোনো নির্দিষ্ট জনসংখ্যা, যেমন শরনার্থী (রিফিউজি কনভেনশন ১৯৫১), শিশু (কনভেনশন অন দ্য রাইটস্ অফ দ্য চাইল্ড ১৯৮৯), এবং যুদ্ধবন্দীর(থার্ড জেনেভা কনভেনশন ১৯৫৯) ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
আধুনিক আন্তর্জাতিক মানবিক আইন দুইটি ঐতিহাসিক ধারা গঠিতঃ
- হেগ আইন, যেটি পূর্বে যুদ্ধের যথোপযুক্ত আইন হিসেবে উল্লেখিত হয়েছিল
- জেনেভা আইন, বা মানবিক আইন।
সংঘাত সম্পর্কিত চুক্তিসমূহকে সুবিন্যস্ত করে যে আন্তর্জাতিক সম্মেলনগুলো হয়েছিল, সেগুলোর মাধ্যমে উদ্ভূত হয়েছিল। এর মধ্যে সুনির্দিষ্ট কয়েকটি হল ১৮৯৯ এবং ১৯০৭ খ্রিষ্টাব্দের হেগ কনভেনশন এবং , যেটি প্রথম ১৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রণীত হয়েছিল। এই আইন দুইটির উভয়েই jus in bello নিয়ে কাজ করে, যেটি সশস্ত্র সংঘাতের সময় কিছু নির্দিষ্ট আচরণ বা পদ্ধতি গ্রহণযোগ্য কি না সে প্রশ্ন নিয়ে কাজ করে।
হেগ আইন, বা সমীচীন যুদ্ধের আইন, “অপারেশন পরিচালনার ক্ষেত্রে যুদ্ধবাজদের অধিকার এবং কর্তব্যগুলো নির্ধারণ করে এবং ক্ষতি করার যে পদ্ধতিগুলো রয়েছে সেগুলোকে সীমিত করে”। বিশেষত এটি, যোদ্ধা বা যুদ্ধে লিপ্তদের সংজ্ঞায়নে নিযুক্ত থাকে; যুদ্ধের পদ্ধতি এবং উপায় সম্পর্কিত নিয়মনীতিগুলো প্রতিষ্ঠা করে; এবং সামরিক উদ্দেশ্যের ইস্যূগুলোকে পরীক্ষা করে।
যুদ্ধ আইন
যুদ্ধবিগ্রহে বর্বরতা রোধ করার রীতিবদ্ধ প্রয়াস শুধুমাত্র ১৯ শতকে বিকশিত হতে শুরু হয়। এই চেষ্টা,আলোকিত যুগের দ্বারা প্রভাবিত রাষ্ট্রসমূহের যুদ্ধবিগ্রহে পরিবর্তনশীল দৃশ্য তৈরীতে সমর্থ হয়। যুদ্ধবিগ্রহের উদ্দেশ্য ছিলো শত্রু রাষ্ট্রকে জয় করা নেওয়া, যেটি শত্রুসৈন্যদের নিষ্ক্রিয় করার মাধ্যমেও করা যেতো। এভাবে, “সামরিক ও অসামরিক ব্যক্তিদের মধ্যে পার্থক্য, যুদ্ধাহত এবং আটককৃত শত্রুসৈন্যদের সাথে মানবিকভাবে আচরণ করার প্রয়োজনীয়তা, এবং বাসস্থান যে অবশ্যই দিতে হবে, আধুনিক আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের কিছু স্তম্ভ, এই সবই এই নীতি থেকে উদ্ভূত হয়”।
জেনেভা আইন
সশস্ত্র সংঘাতে অসামরিক ব্যক্তিদের নির্বিচারে হত্যার রয়েছে একটি দীর্ঘ এবং অন্ধকার ইতিহাস। এই দীর্ঘ ইতিহাস থেকে চিহ্নিত কিছু উদারহরণের মধ্যে রয়েছে ভারতে অশোক কর্তৃক কলিঙ্গদের গণহত্যা; ১০৯৯ খ্রিষ্টাব্দে জেরুজালেম দখলের সময় ক্রসেডারদের দ্বারা মুসলিম এবং ইহুদীদের গণহত্যা; মঙ্গোলীয় আক্রমণের সময় মঙ্গোলীয়দের কর্তৃক নির্বিচারে হত্যা, যেমন বাগদাদ ধ্বংসের সময় যে গণহত্যা; এবং তৈমুর কর্তৃক ভারতীয়দের নির্বিচারে হত্যা। ফ্রিটজ্ মাঞ্চ ১৮০০ খ্রিস্টাব্দের পূর্বের ঐতিহাসিক সামরিক নীতিগুলোকে সারসংক্ষেপ করে: “যে গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো পাওয়া যায় সেগুলো হল: যুদ্ধে এবং সামরিক শক্তি দ্বারা দখলকৃত শহরগুলোতে, সামরিক এবং অসামরিক ব্যক্তিদের হত্যা করা হতো এবং সম্পদ ধ্বংস বা লুট করা হতো।” ১৭শ শতাব্দিতে ডাচ আইনজ্ঞ হুগো গ্রোটিয়াস, যাকে ব্যাপকভাবে পাবলিক আন্তর্জাতিক আইনের প্রতিষ্ঠাতা বা জনক হিসেবে ধরা হয়, লিখেন যে ” তাদের লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে যুদ্ধকে অস্বীকার করতে পারে না, তাদেরকে অবশ্যই শক্তি এবং আতঙ্ককে তাদের সর্বোচ্চ উপযুক্ত মাধ্যম হিসেবে নিযুক্ত করতে হবে।”
সুত্রঃ উইকিপিডিয়া
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন
১৯৭৮ সালে হিউমান রাইটস ওয়াচ নামে আন্তির্জাতিক অঙ্গনে বিশ্বমানবাধিকার কমিশন নামে একটি বেসরকারি ও অলাভজনক সংস্থা আত্মপ্রকাশ করে।মানবাধিকার বিষয়ে গবেষণা, পরামর্শ প্রদান ও সমর্থন প্রদান করা এ সংস্থাটির প্রধান কাজ।আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন সারা বিশ্বব্যাপি মানুষের অধিকার ও অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে কাজ করে থাকে।
বিশ্ব মানবাধিকার দিবস – বিশ্ব মানবাধিকার দিবস কবেঃ শেষ কথা
আশা করি আপনি বিশ্বমানবাধিকার দিবস ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস কবে তা ভালোভাবে জানতে পেরেছেন। আজকের এ আর্টিকেলে আমি বিস্তারিত বর্ননা করার চেষ্টা করেছি। আমার এ আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে বিশেষভাবে ধণ্যবাদ। অন্যকোন আর্টিকেলে আবার আপনাদের সাথে দেখা হবে। সে পর্যন্ত ভাল থাকুন ও আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন।